Search

Sunday, May 30, 2021

আপনি কি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে চিনতেন?

---------------------------------

আখতার-উল-আলম

---------------------------------


তুরস্কের অ্যাম্বাসেডর সাহেব আমাদের দূতাবাসে এসেছেন। বয়স্ক কূটনীতিক। অভিজ্ঞ এবং ঝানু। ১৯৮৬ সালের মার্চ মাসে ওআইসির একটা সম্মেলনে তুরস্ক সফরের সৌভাগ্য হয়েছিল আমার । আমি তখন দৈনিক ইত্তেফাকে। সে সময় এই ভদ্রলোকের সাথে কিছুটা পরিচয়। বাহরাইনে এসে তাকে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত হিসেবে পেয়ে সেই পূর্ব পরিচয়টা যেন নতুন করে পেলেই তিনি আমাদের বাসায় বা দূতাবাসে আসতেন। আমিও সময় পেলে তাঁর ওখানে গিয়ে আড্ডা দিতাম। আমার স্ত্রীও সময় পেলে তার বাসায় যেত। তার স্ত্রীও সময়ে অসমেয় আমাদের বাসায় এসে আমার স্ত্রীর ও মেয়ের সাথে সময় কাটাতেন। নাতিকে নিয়ে খেলতেন।

সেদিন মান্যবর রাষ্ট্রদূত মনে হলো হাতে সময় নিয়েই এসেছেন। নানা বিষয় নিয়ে চলছিল আলাপ আলোচনা। বাংলাদেশের কিছু কিছু পোস্টার তার সামনে। একখানা পুস্তকে শহীদ জিয়ার ছবিখানাই দেখছিলেন। এক সময়ে হঠাৎ করে বলে উঠলেন, এক্সেলেন্সি, যদি কিছু মনে না করেন, একটা আরজ জানাতে চাই। …. আপনি কি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের একখানা পোর্ট্টেট আমাকে দিতে পারেন?

আমি যাথাসমেয় তাঁকে ওই পোর্ট্টেট দেব, কথা দিলাম। সে সময়ে অ্যাম্বেসিতে দু’জন ফার্স্ট সেক্রেটারি ছিলেন। মোহাম্মদ শরিফুল আলম আর জমির উদ্দিন আহমাদ। খুব সম্ভব জমির সাহেবই রাষ্ট্রদূত সাহেবের কাছে জানতে চাইলেন, এক্সেলেন্সি, আপনি কি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে চিনতেন?

তুরস্কের মান্যবর রাষ্ট্রদূতের মুখে যেন ফুটে উঠল একটা বেদনার ভাব। বললেন, আমার জীবনের সে এক দুর্লভ স্মৃতি, বলতে পারেন আনন্দঘন অভিজ্ঞতা। আপনারা যে জিয়াউর রহমানকে চেনেন ও জানেন, আমার চেনাজানার জিয়াউর রহমান তার তা থেকে ভিন্ন, একেবারেই আলাদা। শুধু আপনার নয়, এটা তুরস্কের এবং গোটা মুসলিম উম্মহরও দুর্ভাগ্য যে, আমরা তাকে পেয়েছিলাম বেশিদিনের জন্য নয়। আমরা তাঁকে হারিয়ে কি যে হারিয়েছি, সেকথা বলে শেষ করতে পারব না। কেননা, তিনি এখনো ওআইসির নানা কর্মকাণ্ডে, ওআইসিতে তুরস্কের যোগদানের নেপথ্য নায়ক হিসেবে বিরাজ করছেন। অনেকেই জানেন না। কিন্তু বিষয়টির সাথে আমি ব্যক্তিগতভাবে জড়িত বলেই তার হারিয়ে যাওয়াকে আমি নিজের ক্ষতি বলে মনে করি। বেদনা বিধুর কণ্ঠে কথাগুলো শেষ করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত। তাঁর দু’চোখ অশ্রুভরা।

  • লেখক প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট ও রাষ্ট্রদূত।


No comments:

Post a Comment