Search

Tuesday, February 20, 2018

পরীক্ষার ফল নিয়ে বাণিজ্য

এরা কি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে!



ভাবলে বিস্মিত হতে হয়, এ কী করে সম্ভব! মোবাইল ফোন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মানুষের যোগাযোগ সহজতর করেছে। কিন্তু সেই মাধ্যম আজ কী কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে? প্রকাশ্যে প্রশ্ন বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। যারা এসব করছে, তারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেন? দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি এতই দুর্বল যে এদের কাউকে আইনের আওতায় আনতে পারছে না! চলতি এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গঠন করা তদন্ত কমিটি। একটি পরীক্ষা বাতিল করা হতে পারে। একটি পরীক্ষা বাতিল হওয়া মানে পরীক্ষার্থীদের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করা। অর্থাৎ প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নতুন করে বাড়তি চাপ নিতে হবে। কিন্তু যারা এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত তাদের কী হবে? নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া তো কোনো বিকল্প হতে পারে না। প্রশ্নফাঁস বন্ধ করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো সেটাই হচ্ছে মূল কথা। প্রশ্নপত্র যাতে ফাঁস না হয়, সে জন্য কার্যকর কোনো ব্যবস্থা কি নেওয়া সম্ভব হয়েছে? ওদিকে চমকে দেওয়ার মতো খবর এসেছে গতকালের কালের কণ্ঠে। বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে পরীক্ষার ফল পাল্টে দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে ও বিকাশ মাধ্যম ব্যবহার করে টাকা পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক অভিভাবক এই ফাঁদে পা দিয়েছেন। জিপিএ ৫, গোল্ডেন ৫ পাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে এসব বিজ্ঞাপনে। এর আগে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিক্রির বিজ্ঞাপনেও ব্যবহার করা হয়েছে টেলিফোন নম্বর। এরা কারা? এদের এই শক্তির উৎস কী? আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কেন এদের খুঁজে বের করতে পারছে না। এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে, উৎসে গেলে।

এটা ঠিক যে আমাদের দেশে অনেকের নৈতিক অধঃপতন ঘটেছে চরম পর্যায়ে। কিছু মানুষ যেমন নৈতিকতা ভুলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো অনৈতিক বাণিজ্যে নেমেছে, তেমনি কিছু অভিভাবকও নিজেদের নৈতিক অবস্থানের জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। এতে দেশের যে সর্বনাশ হচ্ছে, নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে, তা কি তাঁরা বুঝতে পারছেন না? এ অবস্থা বেশি দিন চলতে দেওয়া যাবে না। একটি জাতি তো এভাবে অনৈতিকতার সিঁড়ি বেয়ে নিচের দিকে নেমে যেতে পারে না। জাতির এই অধঃপতন এখনই বন্ধ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব ফেসবুক আইডি ও ফোন নম্বর খুঁজে বের করা অসম্ভব ব্যাপার নয়। আমরা মনে করি, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেই প্রযুক্তিগত ও প্রয়োগিক সামর্থ্য আছে। এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন আন্তরিকতা।
  • Courtesy: Kaler Kantho editorial Feb 20, 2018


No comments:

Post a Comment