Search

Saturday, February 17, 2018

খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা বেড়েছে : কর্নেল (অব.) অলি আহমদ


সরকারের 'ভুল সিদ্ধান্ত, প্রতিশোধপরায়ণতা ও প্রতিহিংসার' কারণে খালেদা জিয়া ও বিএনপির জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বী বলে মনে করছেন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। সমকালকে তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে, আইন লঙ্ঘন করে, সংবিধান না মেনে নির্জন-পরিত্যক্ত কারাগারে বন্দি করার কারণে সরকারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

খালেদা জিয়ার মামলার রায় ও দেশের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শুক্রবার সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
 
 

 

কর্নেল অলি বলেন, আগামী এক বছর বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং সংকটপূর্ণ সময়। কারণ, সরকারের ভুল রাজনীতির কারণে এবং সর্বত্র দলীয়করণের ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ। অর্থনৈতিকভাবে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং সাধারণ গরিব মানুষ অসহায় জীবনযাপন করছেন। দেশে এখন প্রতিনিয়ত হত্যা, গুম, নির্যাতন আর দুর্নীতি হচ্ছে; প্রশ্নপত্র ফাঁসের পাশাপাশি ব্যাংক লুটপাট হচ্ছে। হলমার্ক, ডেসটিনি, শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন লুটপাট-কেলেঙ্কারির শিকার মানুষ। উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্প গ্রামেগঞ্জে তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি। গ্রামের অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য আনতে পারেনি। গণতন্ত্র এবং ন্যায়বিচার দলীয়করণের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সুশাসন সুদূরপরাহত। এসব কারণে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নেই, সরকার জনবিচ্ছিন্ন। এখন জনগণ সোচ্চার হয়ে রাস্তায় নামার অপেক্ষায়।

 

এলডিপি চেয়ারম্যান বলেন, খালেদা জিয়া দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, জনগণের মধ্যে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দুবারের বিরোধীদলীয় নেতা এবং ৭৫ বছর বয়সের এই নেত্রী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। দেশের মানুষ মনে করে, তার নামে মিথ্যা মামলা ও তথ্য দিয়ে অবিচার করা হয়েছে। মানসিকভাবে নির্যাতন করার জন্য পরিত্যক্ত, নির্জন কারাগারে জেল দেওয়া হয়েছে।

 

কর্নেল (অব.) অলি জানান, সরকার মনে করেছিল, এ কাজের মাধ্যমে তারা বাহবা পাবে। কিন্তু তিনি মনে করেন, গত নয় বছরে এ সিদ্ধান্ত হলো সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল, যা তাদের ধ্বংস করে দিতে পারে। জাতি-ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে কোনো বিবেকবান ব্যক্তিই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলার শাস্তি মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি।

 

২০ দলীয় এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এবং জোটের নেতারা কয়েক দফা বৈঠকের মধ্য দিয়ে একমত হন, সরকারবিরোধী আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ এবং সাংবিধানিক পন্থায়। খালেদা জিয়াকে জেলে নেওয়ার পর বিএনপির নেতৃত্বে জোটের সার্বিক সমর্থনে তিনটি কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাংবিধানিক রীতিনীতি অনুসরণ করে পালিত এসব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল। এ কারণে সরকারের ইচ্ছা পূরণ হয়নি।

 

অলি আহমদ জানান, এখন তাদের দাবি হচ্ছে, দ্রুত এই মিথ্যা মামলা থেকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মুক্ত করতে হবে। দেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে হবে। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে সরকার গঠন নিশ্চিত করতে হবে।



 দৈনিক সমকাল, ফেব্রুয়ারি ১৭,২০১৮

 

No comments:

Post a Comment