সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেছেন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে নানা ধরনের বাহানা সৃষ্টি করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ১৭ বছর ধরে এই আইনের কোনো কার্যকর প্রয়োগ নেই। আইনমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের জনবিরোধী বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগের প্রতিবাদ এবং আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া দ্রুততর করার দাবিতে নয়টি সংগঠন যৌথভাবে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সুলতানা কামাল বলেন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন করা হয়েছিল অর্পিত সম্পত্তির নামে যাদের জমিজমা দখল করে নেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, সেই জমিজমার আসল মালিক যারা, তাদের কাছে তা ফেরত দেয়ার জন্য আইনটি করা হয়েছিল। আর এই বিষয়ে লক্ষাধিক মামলা এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ঠিক সে সময় একটি উদ্যোগ নেয়া হলো। যে জমিগুলো অর্পিত সম্পত্তির নামে রয়ে গেছে, সেগুলো এখন পর্যন্ত প্রকৃত মালিকদের কাছে ফেরত যায়নি।
সুলতানা কামাল বলেন, আইনমন্ত্রী নানা ধরনের বাহানা সৃষ্টি করে এই আইনটার প্রয়োগ বাধাগ্রস্ত করে রেখে দিয়েছেন। একবার বলছেন আপিল হবে, একবার বলছেন এটার বিরুদ্ধে রিট হবে, একবার বলছেন অনুশাসন, একবার বলছেন এটার বিরুদ্ধে অন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। : তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক অভিজ্ঞতা, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যাকে আমরা মনে করেছি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির একজন মানুষ। তার ব্যক্তিগত ইতিহাস, সেটাও আমরা অনেকে জানি। কিন্তু আজকের দিনে একটি অবস্থানে গিয়ে যে ভূমিকা নিচ্ছেন, সেটি আমাদের জন্য ভীষণভাবে হতাশাব্যঞ্জক। একেবারেই পাল্টে গেছেন তিনি। কিসের জন্য তিনি অনবরত বিপরীত কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন?’
সুলতানা কামাল বলেন, ‘যদিও সরকার দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি। প্রকৃতপক্ষে দেখা যাচ্ছে অনবরত তারা একেবারে বিপরীতমুখী কাজ করে যাচ্ছে।’ সংবাদ সম্মেলনে আট দফা দাবি সংবলিত লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত। অন্যদের মধ্যে নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলনের সুব্রত চৌধুরী, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা উপস্থিত ছিলেন।
- Courtesy: Dainik Dinkal, Feb 25, 2018
No comments:
Post a Comment