উৎসুক জনতা
বাংলাদেশ এখন নিত্য অপহরণ- অার গুমের দেশ। শহর-বন্দর-গ্রামগঞ্জ থেকে অাচমকা তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নানা পেশার মানুষকে। কেউ কেউ ফিরে আসছে, কারো লাশ পাওয়া যায় কারও লাশ বেমালুম গায়েব। অনেকের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়না। এই গায়েবের খবর অার কেউ বলতে পারে না। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ভয়ে মুখ খোলেন না, ছাড়া পাওয়া মানুষজনও ঠোঁটে সেলাই দিয়ে থাকেন নির্বাক।
সম্প্রতি এমন একটি গুম-অপহরণ ঠেকিয়ে দিল উৎসুক জনতা। পালিয়ে যায় সাদা পোশাকের লোকেরা।
ডেইলি স্টার রিপোর্ট -
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা মগবাজারে দিনের এক ব্যস্ততম সময়ে ঘটেছিলো ঘটনাটি। ডিবি পরিচয়ধারী চার ব্যক্তি টেনে-হিঁচড়ে একজনকে তুলে নিলো মাইক্রোবাসে। কিন্তু, জীবন বাঁচাতে সেই ব্যক্তির চিৎকার সন্দেহ জাগালো পথচারীদের মনে।
জনতার ধাওয়া খেয়ে অপরাধীরা মাইক্রোবাসটিকে দ্রুত গতিতে চালিয়ে নিয়ে গেলেও মগবাজার মোড়ের কাছে যানজটে আটকে যায় এটি। ডিবি পরিচয়ধারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও মুক্তি পায় অপহরণের শিকার সেই ব্যক্তি।
সব কিছু দেখে শুনে মনে হতে পারে এটি কোনো সিনেমার কাহিনি। কিন্তু, ঘটনাটি ঘটেছিলো বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ২৫, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, ব্যাংক থেকে প্রায় সাত লাখ টাকা তুলে বাইরে এলে সেই ব্যক্তিকে জোর করে মাইক্রোবাসে ওঠায় অপরাধীরা। সেসময় তাদের হাতে হ্যান্ডকাফ ও ওয়াকিটকি ছিলো। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।
সেই ব্যক্তিকে ফেলে পালিয়ে যায় অপরাধীরা। ফেলে যায় হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি ও ঢাকা মেট্রো চ-১৩৯৫৫১ মাইক্রোবাসটিও। জনতা সেই ব্যক্তিকে উদ্ধার করার পর হামলা চালায় মাইক্রোবাসটির ওপর।
রাস্তার পাশে একজন ফল বিক্রেতা ও প্রত্যক্ষদর্শী মোতালেব হোসেন বলেন, “মনে হচ্ছিল এটি সিনেমার কোনো ঘটনা। মাইক্রোবাসের ভেতর কয়েকজন লোক এক ব্যক্তিকে জাপটে ধরে রয়েছে আর সেই ব্যক্তিটি সাহায্য চেয়ে চিৎকার করছেন।”
পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার গতকাল বলেছিলেন, “আমরা বিআরটিএ থেকে মাইক্রোবাসটির মালিক সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছি।”
যখন জনগণ অসহায়, তখন সম্মিলিত জনগণের শক্তিই তাঁদেরকে রক্ষা করতে পারে, মগবাজারের গুম ঠেকিয়ে দেয়ার ঘটনাটি এই প্রমাণ করে।
সূত্রঃ thedailystar.net
No comments:
Post a Comment