এ হোসেইন
সরকার দেশে উন্নয়নের মেলা বইয়ে দিচ্ছেন। ঝড়ো প্রচার চলেছে দুর্বার গতিতে। তবে সিপিডি যে সব তথ্য-উপাত্ত দিয়েছে তাতে দেখা যায়, ধনী অারও বিত্তবান, গরিব অারও গরিব হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটা অর্থমন্ত্রী ‘রাবিশ’ বলে উড়িয়ে দিয়ে অন্ধ বনলেই প্রলয় বন্ধ হবে না।
তবে সরকারের জন্য এটি মাথাব্যথা বলে গণ্য না-ও হতে পারে।
বাংলাদেশের অামলা জগত প্রায়ই প্রবৃদ্ধি অার উন্নয়নের ব্যাপারটা গুলিয়ে ফেলেন। অার তাদের অনুগত মিডিয়াও একই তরিকা অনুসরণ করে। তবে অর্থনীতিবিদেরা বেশ কিছুকাল ধরেই এমনকি সরকারের নিজস্ব উপাত্ত ধরেই সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অাসছেন। উদাহরণ স্বরূপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম এ তসলিম খানাওয়ারি অায়-ব্যয়-এর জরিপের উপাত্ত উদ্ধৃত করে সম্পত্তির ব্যাপক সম্প্রসারণের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করেনন। তিনি সরকারি পর্যায়ে তৈরি ( যেমন বিবিএস-এর উপাত্ত) অন্যান্য তথ্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি পারিবারিক অায় ২০১০-২০১৬ মেয়াদে বরং ১১ শতাংশ কমেছে। অথচ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপাত্ত বলছে প্রকৃত জাতীয় অায় ৪২ শতাংশের ও বেশি বেড়েছে। প্রফেসর তসলিম দাবি করছেন, প্রবৃদ্ধির উপকার সাধারণ মানুষের ঘরে যাচ্ছে না।
তবে সরকার তো তাদের নিজের দেওয়া উপাত্তকে অস্বীকার করতে পারেন না। উপেক্ষা করছেন। কেননা, এটা মেনে নেওয়া তাদের দরকার নেই। কেননা উন্নয়ন হচ্ছে সরকার ও ধনীদের মধ্যে যোগাযোগের একটা চক্র। দরিদ্র সেখানে কোনো ফ্যক্টর নয়। তাদের কাছে কেবল এগ্রিগেটসই ধর্তব্য। বিত্ত যাদের অাছে তারাই গণ্য, গরিব একান্তই নগণ্য।
সিপিডি বলেছে দূর্বত্তায়িত ব্যাঙ্কিং খাতে সঙ্কট, মূল্যস্ফীতি, অাকাশমূখি অামদানি, কম রপ্তানি, অপর্যাপ্ত রেমিট্যান্স, ব্যাঙ্কে দলীয় অাধিপত্য ও রাস্ট্রীয় তহবিল লোপাট ইত্যাদির কারণে অর্থনীতি চাপে রযেছে।
তাই দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও এখন দূর্বৃত্তায়িত সেই ১৯৭২ থেকেই। রাষ্ট্রকাঠামো ও ধনীরা এখন একে অন্যকে ঠেকা দিচ্ছে। ক্ষমতা অজেয় হয়ে উঠেছে একই ব্যবস্থায়। কতোই কায়েমি হচ্ছে এই ব্যবস্থা ততোই গণতন্ত্র দূরে সরে যাচ্ছে। মূলমন্ত্র হয়ে উঠেছে ধনী-দলীয় অাঁতাত।
রাষ্ট্রের প্রকৃতি এখন অসমতার বুনিয়াদে দাঁড়িয়ে অাছে। অার এভাবে যা অাসছে সেটাই এই অশুভ অাঁতাঁতের জন্য বোনাস। সরকার তাই ফাঁক যাই কিছু ধরা পড়ুক তাতে নাক গলাবে না।
- সূত্র - বুধবার, জানুয়ারি ১৭, ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজে প্রকাশিত সাংবাদিক ও গবেষক অাফসান চৌধুরির লেখা অনুসারে।
No comments:
Post a Comment