সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে কার্যালয় বানিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিও যুবলীগকে জায়গা ছেড়ে দিয়ে বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর তৈরি করেছে।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, যুবলীগের এই নেতাদের পৃষ্ঠপোষক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুন্সি কামরুজ্জামান। তিনি বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিও। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে যুবলীগের কার্যালয় উচ্ছেদ করতে পারি না। তারপরও তাদের একাধিকবার বলেছি। কিন্তু তারা আমার কথা শুনছে না। তাই কার্যালয়ের জায়গা ছেড়ে দিয়েই মাঠের সীমানাপ্রাচীর দিয়েছি।’
মগবাজার-মৌচাক উড়ালসড়কের নির্মাণসামগ্রী রেখে প্রায় পাঁচ বছর ধরে মাঠ দখল করে রেখেছিল তমা গ্রুপ। তারা তাদের শ্রমিকদের জন্য মাঠের উত্তর পাশে একটি দোতলা ভবনও বানিয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে আড়াই বছর আগে মাঠের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে পানির পাম্প বসিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে অবৈধ কার্যালয় করেছে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি।
গত ২৬ অক্টোবর উড়ালসড়কটি উদ্বোধনের পর মাঠ থেকে মালামাল সরিয়ে নিয়েছে তমা গ্রুপ। কিন্তু তাদের করা দোতলা ভবনটি নিজেদের ব্যবহারের জন্য রেখে দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যুবলীগের কার্যালয়টি অপসারণ করা হয়নি।
সিদ্ধেশ্বরী রোডের বাসিন্দা আহমেদ সবুর ও শওকত আলী বলেন, মাঠটিকে তার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। না হলে মাঠটি একসময় অস্তিত্ব হারাবে। একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, প্রায় প্রতিরাতে ওই কার্যালয়ে আড্ডা বসে। আছে মাদক সেবনের অভিযোগও।
জানতে চাইলে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সেলিমুজ্জান রেজা বলেন, ওই কার্যালয়টি দলের নয়। কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাকসুদ এটি তৈরি করেছেন। তিনি তাঁর পক্ষের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সেখানে বসেন।
মাকসুদও স্বীকার করেছেন তিনি এটা ব্যক্তিগত অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন। তবে তাঁর দাবি, স্কুলের সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরীর অনুমতি নিয়ে এটা করা হয়েছে। এ জন্য স্কুলকে মাসে এক হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয়।
সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) শেখ ফরিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী স্কুল কর্তৃপক্ষ কাউকে জমি ইজারা দিতে পারে না, দেয়ওনি। তিনি বলেন, মাঠটি সংস্কার ও দেখভালের দায়িত্ব বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামানের। তাই মাঠের ভেতর যুবলীগের কার্যালয় থাকবে কি না, তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
- Courtesy: Prothom Alo Mar 19, 2018
No comments:
Post a Comment