Search

Saturday, March 31, 2018

স্থানীয় সরকার নির্বাচন — সন্ত্রাসীদের সামাল দিন




সম্পাদকীয়   —  দেশের ১৩৩টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নির্বাচন বৃহস্পতিবার সম্পন্ন হয়েছে। বেশির ভাগ স্থানীয় সরকার নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হলেও বেশকিছু নির্বাচনে ভোটারের বদলে পেশিশক্তি ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের বেপরোয়া উৎসব অনুভূত হয়েছে। স্বভাবতই সেসব স্থানীয় সরকারের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে সংঘর্ষ, গুলি ও জাল ভোটের মধ্য দিয়ে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে বলা হয় তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের নির্বাচন। কিন্তু সংঘর্ষ ও কেন্দ্র দখলের অপসংস্কৃতিতে সে নির্বাচনেও প্রাণের আবেগ থাকছে না। বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে টাঙ্গাইলে ভোটের বাক্স ছিনতাইয়ের সময় পুলিশ, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত পক্ষ এবং প্রতিবাদী এলাকাবাসীর ত্রিমুখী সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। চট্টগ্রামে কাউন্সিলর পদের উপনির্বাচনে আগ্নেয়াস্ত্রধারী যুবকদের মহড়া ভোটের পবিত্রতাকে ক্ষুণ্ন করেছে ভয়াবহভাবে। বেশির ভাগ স্থানীয় সরকার নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হলেও একাংশের হানাহানি ও অনিয়ম পুরো নির্বাচনব্যবস্থাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ১৩৩টি স্থানীয় নির্বাচনে সন্ত্রাস ও কেন্দ্র দখলের যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা সরকারি দলের এবং বড় মাপে সরকারের ভাবমূর্তির জন্য বিড়ম্বনা ডেকে এনেছে। নির্বাচন কমিশনের জন্যও যে তা অস্বস্তি বয়ে এনেছে সহজেই অনুমেয়। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সরকার বা নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি না থাকলেও কোনো কোনো স্থানে সরকারি দলের দুর্বিনীত নেতা-কর্মীদের কারণে তা ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষত চট্টগ্রামে এক নারী প্রার্থীর সমর্থকদের অস্ত্রের মহড়া ছিল তাজ্জব হওয়ার মতো। আমরা আশা করব, দেশের নির্বাচনব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বৃহস্পতিবারের স্থানীয় নির্বাচনে সংঘর্ষ ও ভোট কেন্দ্র অপদখলের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে। তাদের আইনের আওতায় এনে সাজা নিশ্চিত করা হবে। স্থানীয় নির্বাচনে সন্ত্রাসীদের দাপট ঐতিহ্যের অংশে পরিণত হওয়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। এ দুর্ভোগের ইতি ঘটাতে সন্ত্রাসী ও সমাজবিরোধীরা যাতে স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ না পায় এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সমাজবিরোধীদের কবল থেকে স্থানীয় সরকারগুলোকে দূরে রাখার স্বার্থেই এ বিষয়ে উপায় খুঁজে বের করার বিষয়টি জরুরি।

  —  শনিবার, মার্চ ৩০, ২০১৮ 

No comments:

Post a Comment