এ হোসেন
দিন কয়েক আগে প্রকাশিত শীর্ষনিউজের এক খবরে প্রকাশ, পুলিশ গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও ও সাবেক মেয়র মশিউর রহমান বাবলুর ছেলে তানভির রহমান মিছিলের বৌভাত অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয়। পুলিশ জানায়, ঐ অনুষ্ঠানে বিএনপি জামায়াত নেতারা গোপন বৈঠক করবে বলে খবর ছিল বলে ওসি দিলীপ কুমার দাস জানান।
অনুষ্ঠানে হাজার দেড়েক মেহমানের আপ্যায়নের ব্যবস্থা ছিল বলে স্থানীয়রা জানায়। তারা জানায়, পুলিশ অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে চুলায় পানি ঢেলে দেয় ও প্লাস্টিকের চেয়ার লণ্ডভণ্ড ও ভাঙচুর করে । অনুষ্ঠান হতে পারেনি। এর পর সেখানে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অাসামীদের অন্যতম একজনকে পাকড়াও করার পর এবং সদ্যবিবাহিত সাবেক মেয়রের এক পুত্র ও তার ভাইকে হাটি কুমরুল থেকে গ্রেপ্তারেরপর পুলিশ সেখানে মোতায়েন রাখার কারণ জানায়নি পুলিশ।
পুলিশ সেখানে জামায়াতের যে নেতাকে আটক করে। তিনি আবদুল খালেক, সাবেক মেয়র মশিয়ুর রহমান বাবলুর দুলাভাই। অতি কাছের আত্মীয়। ছেলের বিয়েতে বোন জামাইয়ের উপস্থিতি সামাজিক প্রথা। সামাজিক অনুষ্ঠানে তিনি এসেছিলেন। দেড়হাজার লোকের সামাজিক সমাবেশে আর যাই হোক গোপন রাজনৈতিক বৈঠক হতে পারে না। বিএনপি নেতা বাবলু রাজনৈতিক হয়রানি এড়াতে স্বাভাবিক কারণেই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতেই পারেন। উদোরপিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে সদ্য বিবাহিত বর ও তার আপনভাইকে গ্রেপ্তার করা রীতিমতো অসভ্যতা। এখানে পুলিশের কী কৈফিয়ৎ থাকতে পারে?
এখানে দৃষ্টত নিছক যন্ত্রের ভূমিকায় অবতীর্ণ। হুকুমের নিষ্প্রাণ দাস। অথচ এ হেন পুলিশ সাফাই দিয়েছে তাদের কাছে গোপন রাজনৈতিক বৈঠকের খবর ছিল।
যদি সামিয়ানার নিচেও ওরা বৈঠক কেউ করার মতলব করে থাকে তো সেটা করলে তা নিষিদ্ধ ছিল বলে তো মনে হয় না। কেননা, মাত্র কয়েকদিন আগে আলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি রাজনীতি নিয়ে মাঠে আসতে পারবে না। রালে, করলে ওরা ঘরে, অফিসে বসে আন্দোলন করতে পারে। কিন্তু আপাতদৃষ্টে নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর বিএনপি সভাপতি ও সাবেক মেয়র মশিউর রহমান বাবলুর নববিবাহিত পুত্র ও তার আপন ভাইকে পুলিশ আদাজল খেয়ে গ্রেপ্তার করে প্রমাণ করেছে জনাব ওবায়দুল কাদেরের ফিল্মি কায়দার এই ঘোষণার কোন কাগজি মূল্যও নেই। পুলিশ তার চেয়েও রাজনৈতিক বিষয়ে বড়ো সিদ্ধান্ত নির্ধারক।
২রা মার্চ, শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। চাঁচকৈড়ে বিয়ে বাড়ি এলাকায় এখন ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান,শুক্রবার দুপুরে ছেলের বৌভাত অনুষ্ঠানের জন্য প্রায় দেড় হাজার অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা করে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। বাবলু রাতভর রান্নাবান্নার আয়োজন ও অতিথি আপ্যায়নের জন্য চেয়ার টেবিল সাজানোর তদারকি করেন। হঠাৎ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গুরুদাসপুর থানার ওসি দিলিপ কুমার দাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে ওই বিয়ে বাড়িটি ঘিরে ফেলে বৌভাতের আয়োজন বন্ধ করতে বলে। পুলিশ রান্না করার জন্য চুলায় পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে দেয়। এ সময় তারা বাবলুকে খুঁজতে থাকে এবং কিছু প্লাস্টিকের চেয়ার-টেবিল ভাঙে বলেও এলাকাবাসী জানান।
ওসি দিলীপ কুমার দাস কবুল দিয়ে জানান, কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান পণ্ড করা বা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা পুলিশের কাজ নয়। অথচ দিবালোকের মতো স্পষ্ট যের পুলিশ বৌভাতজ অনুষ্ঠান বন্ধ করার অাদেশ দিয়েছে। বিয়ে নিয়ে পুলিশের কিছু মাথা ঘামাবার বা এখতিয়ার নাই-ই থাকে তাহলে এই অনাকাঙ্খিত অনাসৃষ্টি কেন?
এটা নিশ্চয়ই পুলিশের কাজ হয়ে উঠেছে। নববিবাহিত বর ও তার আপন ভাইকে কয়েক মাইল ধাওয়া করে পাকড়াও করার মাঝে পুলিশের কি বাহাদুরি? ঘটনা ওখানেই শেষ নয় যদিও জামায়াত নেতা বাবলুর ভগ্নিপতি তাকে তো ঘটনাস্থলেই পাকড়াও করা হয়েছে। বাবলু পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে পেরেছে বলেই কি তার সদ্যবিবাহিত ছেলে ও তার আপন ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশকে ফুলিশী বাহাদুরী করতেই হবে? আর বিয়েবাড়িতে তাণ্ডবের শেষ সেখানেই নয়, বিপুল পুলিশ দিয়ে ঐ ভাঙা বিযেবাড়ি ঘিরে রেখে কী ফায়দা? চোর পালাবার পর এটা কি পুলিশের বুদ্ধিবাড়ার নমুনা। যদি তাই হয় বলতেই পুলিশ বেড়ে একখান কাম করছে বটে! রাজনৈতিক দিক থেকে দেশের প্রধান বিরোধী দলকে কোনঠাসা করার পর এটা কি তাদের ওপর সামাজিক হামলার অাভাস?
ওবায়দুল কাদের আরও বলেছেন বিএনপিকে --- ঘরে বসে আন্দোলন করুন, অফিসে করুন। রাস্তায় কেন? জনদুর্ভোগ কেন। যখন এই লেখাটা চলছে তখন বাগেরহাট খুলনায় ঐতিহাসিক জনসভার প্রস্তুতি চলছে আওয়ামী লীগের। পথে বাস থেকে নামতেই এক সাংবদিকের সাথে দেখা। নিয়ম রক্ষার জন্য বললাম তা এই সাত সকালে কোথা থেকে। বলেন, আর বলবেন না, ভাই, বৌ যাবে বাপের বাড়ি বাগেরহাট। গিয়েছিলাম বাসের টিকিট কাটতে সায়েদাবাদ বাস স্টান্ড। বাসের টিকিট নেই। রাতের আগে বাস মিলবেই না। কী দুর্ভোগ! কি ব্যাপার? বাস গেছে জনসভার মানুষ টানতে খুলনায় বাগেরহাটে।
- শীর্ষনিউজ অবলম্বনে।
No comments:
Post a Comment