Search

Thursday, June 7, 2018

গণতন্ত্রমুক্ত বাংলাদেশ!

মিনা ফারাহ

মিনা ফারাহ

নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো ক্রাইসিস বাংলাদেশে নেই। তবে এই একটি ক্রাইসিস থেকেই অসংখ্য ক্রাইসিসের জন্ম। এজন্য দায়ী দেশী-বিদেশী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করাই আজকের লেখাটির উদ্দেশ্য। মোদিমুক্ত ভারত বা কংগ্রেসমুক্ত ভারতের কথা বহু শুনেছি; কিন্তু শান্তিনিকেতনে এক ধরনের গণতন্ত্রমুক্ত হয়ে গেল বাংলাদেশ! বোলপুর থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে যা শোনানো হলো, কাউকেই না জানিয়ে উজাড় করে দেয়ার প্রমাণ। প্রতিদানের ক্ষমতা না রাখলে, পুব-পশ্চিম দুই দিক থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে ঘর করার হুমকি মোদিকে। সত্যিই এমন রাজনীতির আগামাথা হিসাব করার বুদ্ধি ১৬ কোটির মধ্যে একজনেরও নেই।

শান্তিনিকেতনে ১ ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ২০১৮-এর নির্বাচন বেচাকেনার কথা ফাঁস করে আনন্দবাজার প্রথম পৃষ্ঠায় লিখেছে- ‘হাসিনা প্রতিদান চান মোদির কাছে।’ কিসের প্রতিদান? সেটা দিতে হলে ৫ জানুয়ারির মতো আবারো ভোট চুরি করে ক্ষমতার ব্যবস্থা করে দিতে হবে মোদিকেই। এখন আরো সুবিধা, মোদি রাজি না হলে চীন তো হাঁ করে বসে আছে। এভাবেই শান্তিনিকেতনে বুঝি স্বেচ্ছাচার যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। তাহলে কি আসছে আরেকটা সিসি মার্কা নির্বাচন?

সরকার এর নাম দিয়েছে - ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র’। মানুষও বিশ্বাস করছে, তাকেই বারবার ক্ষমতায় রাখলে কয়েক দিন পরই দেশটা মালয়েশিয়া হয়ে যাবে। মাহাথির এবং লি কুয়াংরা যা পারেননি, ওমুক সালে ইউরোপকেও হার মানাবেন। স্যাটেলাইট পাঠিয়ে মহাশূন্যের দ্রাঘিমাংশের জমি কেনার গল্প খুব ভালো। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে মর্ত্যরে রাস্তাঘাটের যে নিদারুণ অবস্থা, মানুষ জানতে চায়- একনেকে বরাদ্দ করে, ঘাটতি বাজেট দেখিয়ে, তারল্য সঙ্কটের কথা শুনিয়ে লাখ লাখ কোটি টাকা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ?

এর সহজ ব্যাখ্যা করেছেন মার্ক টোয়েন- ‘কাউকে ভুল বোঝানো হয়েছে, এটা বিশ্বাস করানোর চেয়ে ভুল বোঝানোই সহজ।’ অর্থাৎ ৫০ জন ছাত্রকে শেরেবাংলার নাম শুনেছে কি না জিজ্ঞেস করলে একটি হাতও উঠবে না। কিন্তু দাউদ ইব্রাহিমের কথা জিজ্ঞেস করলে ১০০টি হাত একসঙ্গে উঠবে।

গণতন্ত্রমুক্ত দেশ কায়েমের জন্য ভারত কি একাই দায়ী?

আমাদের নির্বাচন যাদের হাতে ওয়াশিংটন-টু-দিল্লি, আত্মজীবনীতে ষড়যন্ত্রের কিছুটা লিখেছেন প্রণব। অন্যথায় ৫ জানুয়ারি হতে পারল কেন? বিষয়টি এরকম- ‘স্বৈরাচারী বাশার আল আসাদকে যেভাবে ক্ষমতায় রেখেছে পুঁজিবাদীরা, গণতন্ত্রের মুখোশ পরিয়ে তার চেয়ে বেশি সুবিধা দিচ্ছে হাইকমান্ডকে।’ এ কারণে মুরসি আউট, সিসি ইন। একই কারণে ’৯৬-তে তিন মাসও টিকতে পারেননি খালেদা। এর কারণ, ‘ভারতের নেতৃত্বে এক ব্যক্তিকেই বেছে নিয়েছে পুঁজিবাদীরা।’ গণতন্ত্রমুক্ত বাংলাদেশের লক্ষ্যে গরিবের ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় করে ‘ডিলিট’ আয়োজন যেন রাজনীতি থেকে খালেদাকে স্থায়ী ডিলিটের বার্তা। 

আমার ধারণা খুব কমই ভুল হয়ে থাকে। ২০১৮-এর নির্বাচন যেন শুধুই শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা না হয়। সক্রেটিস কাদেরের উচিত, মরা বিএনপিকে নিয়ে ঝামেলা করার বদলে শপথ গ্রহণের মোরগ-পোলাও ঠিক করা। পরিমাণমতো লবণ কিনে বাবুর্চিকে দেয়া। কারণ, পদত্যাগ সাপেক্ষে নির্বাচন আর ইসরাইল-ফিলিস্তিন ভাই ভাই- একই কথা। ফিলিস্তিনে ইহজীবনেও শান্তি আসবে না, এ দেশেও ভোট দিতে পারার মতো নির্বাচন হবে না। কারণ, তাহলে লুজার হবে পুঁজিবাদীরাই। এই ঝুঁকি কিছুতেই নেয়া হবে না। অন্যতম দৃষ্টান্ত, আসাদ-সিসি বনাম গাদ্দাফির ভাগ্য।

তাই সিসি মার্কা সাংবিধানিক জটিলতাগুলো এখনই দূর করতে হবে। কারণ, এক দেশে দুই ধরনের রাষ্ট্রনীতি চলতে পারে না। বুদ্ধিমান মুজিব সেজন্যই চতুর্থ সংশোধনী এনেছিলেন।

২.
যেসব কারণে গণতন্ত্রমুক্ত বাংলাদেশ এখন বাস্তব। সর্বোচ্চ আদালতের সর্বোচ্চ বিচারপতি সিনহা বলে দিয়েছেন দলটি কেন ভোট চোর এবং সংসদ কেন অবৈধ! লাখ লাখ পোস্টার ছাপিয়ে যে গণতন্ত্রের প্রচার চলছে, ১৬তম সংশোধনীর রায় অনুযায়ী এর কোনো অস্তিত্বই আদালতের কাছে নেই বিধায় এমন প্রতিটি কার্যকলাপই অবৈধ।

বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভারতের নির্বাচনের দিকে তাকাতে হবে। ২০১৯-এর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সব দলের মধ্যে সাজ সাজ রব। এ দেশে নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া এসব খবর দেখায় না। মোদিকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে একতাবদ্ধ নতুন জোটের কয়েকটা উপনির্বাচনে বিজয় এবং ছোট নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি। আগামী নির্বাচন মোদির জন্য অশনিসঙ্কেত হতে পারে। ভোটের বাক্স নিয়ে লীলাখেলা নেই। ইসির চেহারাও কেউ দেখে না। অবশ্যই তাদের গণতন্ত্রে ভাইরাস আছে; তার পরও লোকসভা ও রাজ্যসভায় গণতন্ত্র¿চর্চা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। পাহাড় সমান দুর্নীতির পরও সংসদে কংগ্রেস।

সামান্য পঞ্চায়েত নির্বাচন কিংবা কর্নাটকে যা ঘটল, এগুলোই মৌলিক গণতন্ত্র। এমনকি কর্নাটকে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীকে দুই দিনের মাথায় বিদায় করে শপথ নিলো নতুন জোট। অনেকেরই ধারণা, ২০১৯-এ মোদির বিরুদ্ধে লড়বেন মমতা। এসব বলার কারণ, তারাই আমাদের অগণতান্ত্রিক সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার শুরু করেছিলেন স্বৈরাচারী ইন্দিরা। পরে পশ্চিমা পুঁজিবাদীরা এর অন্যতম বড় সুবিধাভোগী। 

সর্বশেষ প্রমাণ, খালেদাকে সলিটারি কনফাইনমেন্টে রেখে শেষ করার পরিকল্পনা দেখেও পশ্চিমারা রহস্যজনকভাবে নীরব। ১/১১-এর বেলায় যা ঘটেনি। বরং ওয়াশিংটন, জাতিসঙ্ঘ ও দিল্লিতে হুলস্থুল। কোনো গণতান্ত্রিক দেশের বিরোধী নেতাকে এভাবে আটকে রাখার ঘটনায় পশ্চিমারা নীরব থাকবে, ভাবাই যায় না। অথচ এত দেশের রাষ্ট্রদূত ঢাকায়! রাশিয়া-ভেনিজুয়েলা নির্বাচনের বিরুদ্ধে এরাই হইচই করছেন। কয়েকটা সরকার পরিবর্তনেরও চেষ্টা চলছে ওয়াশিংটনে।

বার্নিকাটরা জানেন, গুয়ানতানামো বের সন্ত্রাসীরাও খালেদার চেয়ে কোনো কোনো দিক দিয়ে ভাগ্যবান। উকিল, মানবাধিকার সংস্থা, চিকিৎসা, খাদ্য, ধর্ম, বিনোদন- সব কিছুতেই অধিকার। কিন্তু একজন বয়স্ক, অসুস্থ, তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে যা করা হচ্ছে, সব জেনেও কোনো প্রশ্ন নেই একজন রাষ্ট্রদূতেরও! বরং অবৈধ সরকারকেই তোষণ। সুতরাং দোষ একা ভারতের নয়; এটাই ভালো করে বুঝতে হবে।

খালেদাকে নির্বাচনের আগে বের করা হবে না বলেই জামিন আটকানোর প্রহসন। যখন জামিন হবে, তত দিনে গণতন্ত্র কথার কথা হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশে। বিএনপি জোট অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। কারণ, করপোরেটরা চায়, স্থিতিশীল বাংলাদেশের স্বার্থে ইরাক-মিসরের মতো সিলেকশন। ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ নিয়ে কথা। এরাই ’৬৯-এর গণতান্ত্রিক দলটিকে বাধ্য করল, ব্রিটিশের ডিভাইড অ্যান্ড রুল শাসনে। এতে লুজার হলো বাংলাদেশ।

৩.
গণতন্ত্রমুক্ত বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল জন্মকালেই। বিষয়টি কখনোই উন্মোচিত না হওয়ার কারণ, যমজের মতো কোমর থেকে জোড়া আওয়ামী লীগ এবং কংগ্রেসের ‘ভাই-ভাই রাজনীতি’। মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই ইন্দিরার কর্মকাণ্ডে আমার মতো অনেকের সন্দেহগুলো পরে আরো জোরদার হয়েছে। ১৯৭৪-৭৫ সালে পৌঁছে মনে হয়েছে, ভারতের প্রভাবের নিগড়ে রাখার উদ্দেশ্য ছিল। পাকিস্তান ভেঙে যাওয়ার পরই পশ্চিমকে অ্যাটাক করতে গেলে ব্রেজনেভের আপত্তিতে তা হতে পারেনি। কিন্তু তার পরই সিকিমের লেন্দুপ দর্জিকে দিয়ে যা আদায় করা হলো, ইতিহাস সাক্ষী। এর পরই ভোট চুরি করে ক্ষমতায় গিয়ে ’৭৫-এ যা ঘটালেন প্রিয়দর্শিনী, সেই পাপের বোঝাই টানছে কংগ্রেস। সংসদের ব্যাঘ্র থেকে এখন মুষিকের সিটে। গান্ধী পরিবারটি এ অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য বোঝা হওয়ার বহু প্রমাণও দিয়েছে।
পরে ‘এশিয়ান কিসিঞ্জার’খ্যাত প্রণবের চাণক্য চাতুর্য নিয়ে আমিই লিখছি।

আমাদের ‘নির্বাচনকে কারাগারে পাঠানো’র জন্য দায়ী প্রণবের স্বজনপ্রীতি। তাকে যারা চেনে না, তারাই আশাবাদী হতে পারেন বর্তমান চালচিত্র দেখেও। অবসরে যাওয়ার পর ভারতের গণতন্ত্রে ভেজাল ঢোকানোর চেষ্টা। সন্ত্রাসী ‘আরএসএস’-এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হতে চলেছেন বৃদ্ধ প্রণব। রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ভেঙে কাকা-ভাতিজির কুখ্যাত ‘ইলিশ রাজনীতি’ পৌঁছে দিয়েছেন শান্তিনিকেতনে। ক্ষমতায় কে থাকবেন, মোদিকে প্রণবের পরামর্শই যেন শেষ কথা। এটাই ফাঁস করে দিলো আনন্দবাজার। তার ঢাকা সফরের পরই সব লণ্ডভণ্ড এবং মোদি আরো বেশি বিএনপিবিমুখ। এটা যে একটি দল, মনেই করেন না মোদি। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের টেলিফোন কথোপকথন প্রকাশ পেলে আসল প্রণবের চেহারা জানা যেত।

৪.
কংগ্রেস এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শের গুরুত্বপূর্ণ সাযুজ্য দৃশ্যমান। পারিবারিক শাসনে বিশ্বাসী, তারা অন্য কোনো দলকে জায়গা না দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ, কংগ্রেস যা করেছে নেতাজী এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে সেটাই করছে আওয়ামী লীগ। মোদির সরকার সিক্রেট ফাইলগুলো অবমুক্ত করলে আসল চেহারা ফাঁস হলো। ইতিহাস থেকে নেতাজীকে মুছে ফেলতে কিছুই বাকি রাখেনি নেহরু পরিবার। সিক্রেট ফাইল প্রকাশের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের যারপরনাই যুদ্ধ। কারণ, ব্রিটিশের ভারত ত্যাগের মূলে নেহরু নন, নেতাজীর প্রভাবই আসল। নেতাজীর বীরত্ব লুকাতেই এসব অপচেষ্টা। সিক্রেট ফাইলগুলোতে প্রমাণ- নেহরু নন, নেতাজী প্রথম প্রধানমন্ত্রী। এসব বলার কারণ, স্বাধীনতার ঘোষক নিয়েও একই ধরনের কারসাজি থেকে বিএনপিমুক্ত বাংলাদেশ শুরু করা হয়েছিল ১৫তম সংশোধনী এনে।

৫.
আরো ১০০ বছর না হয় ক্ষমতায় থাকছে আওয়ামী লীগ। তার পরও যেন কুকুরের মতো মানুষ মারা বন্ধ করে। নির্বাচনের আগে নতুন তামাশা মাদক! রোজার মাসে এমন শুট-আউট কি ফিলিস্তিনিরাও দেখেছে? রমজানে এ পর্যন্ত বাংলাদেশীদের লাশের সংখ্যা শিউরে ওঠার মতো। জম্মু-কাশ্মিরেও সিজফায়ারের ডাক। অথচ ‘বিশ্বের তৃতীয়-বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ’ হয়েও বাংলাদেশে এর উল্টো চিত্র। এর নাম দিয়েছি বাংলাদেশী দাউদ ইব্রাহিম ফ্যাক্টর। এসব নাটকের উদ্দেশ্য, সিসি মার্কা নির্বাচনের আগে বিরোধীশিবিরে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি। এই কাজে পশ্চিমাদের আপত্তি না থাকার প্রমাণ- রাষ্ট্রদূতদের পিনপতন নীরবতা।

স্কাইপ এবং সিনহার পর তুরিন আফরোজ ঘুষ কেলেঙ্কারি প্রমাণ করল গণতন্ত্রমুক্ত বাংলাদেশ একটি সম্মিলিত আয়োজন। কারণ, ৯২ দিনের আন্দোলনের পরই খালেদাকে কার্যত চার দেয়ালের ভেতরে বন্দী করার দায় ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূতের। ফিরোজায় দেখা করে রাস্তা ছাড়ার হুমকি। না হলে অন্য ব্যবস্থা। এরপর আর কখনোই রাস্তার আন্দোলনে দেখা যায়নি। এর পরই নিভে গেল ‘পল্টনের আলো’। ওই রাস্তায় আর কখনোই লাখ লাখ পোস্টার আর গণতন্ত্রকামীদের সমাগম হয়নি। এভাবেই পরিকল্পিতভাবে সংসদকে অকার্যকর করে অদ্ভুত স্টাইলে চলছে দেশ। 

উন্নয়নের নাম এখন তেল-গ্যাস-সুন্দরবন দখল। ওয়ানবেল্ট ওয়ের ষড়যন্ত্র। ডলারের বিনিময়ে টাকাকে আরো দুর্বল করা। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ইয়াবা এবং অস্ত্রের ব্যবসা। গভীর সমুদ্রবন্দর দখলের প্রতিযোগিতা। প্রায় মূল্যহীন শ্রমবাজারে সর্বোচ্চ শোষণ। অসমবাণ্যিজের অভাবনীয় উত্থান। পুঁজিবাজার-ব্যাংক, একনেক- সর্বত্রই দাউদ ইব্রাহিম ফ্যাক্টর। অফশোরে বিনিয়োগের ভূস্বর্গ। প্রবাসে লুটের টাকায় মিলিয়নিয়ারদের উত্থান... করপোরেট পৃথিবীর চেহারা এটা।

‘বিএনপি নির্বাচনে না এলে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার ক্ষতি হবে না’- বলেছেন সদা সরব কাদের। এবার তার উদ্দেশে একটি কেস হিস্ট্রি, যার জবাব তাকে দিতে হবে। নিউ ইয়র্কে অনির্বাচিত এক মন্ত্রীর পুত্রের প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের খবরে তথ্যপ্রমাণসহ হুলস্থুল সোস্যাল ও প্রিন্ট মিডিয়া। ছাত্র হয়ে এত টাকা কোথায় পেল, প্রশ্নটি টক অব দ্য টাউন। আওয়ামীকেন্দ্রিক ফেইক মিডিয়া খবরটি ছাপায়নি। অথচ হাস্যকর মামলায় খালেদার সঙ্গে কিম জংয়ের মতো আচরণ। জানি, এর কোনো জবাব দিতে পারবেন না। যেমন পারবেন না হাইকমান্ডও। যা হোক, ভারতকে উজাড় করে দেয়ার বিনিময়ে ক্ষমতায় থাকার বিষয়টি পরিষ্কার। আসল কথা একটাই। সিরিয়ার আসাদের চেয়ে হাইকমান্ডের গদির পজিশন ভালো। গণতন্ত্রের তাবিজ গলায়, নিন্দুকদের রাডারের বাইরে। তিউনিসিয়ার মতো সবাই একসঙ্গে রাস্তায় না নামলে গণতন্ত্রমুক্ত বাংলাদেশই শেষ কথা। 

  • কার্টসি  — নয়াদিগন্ত/ জুন ৭, ২০১৮। (সংক্ষেপিত)। 

No comments:

Post a Comment