Search

Sunday, June 24, 2018

হাসান উদ্দিন সরকারের ১৯ দফা নির্বাচনী ইশতিহার



গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২০দলীয় জোট প্রার্থী শিক্ষাবন্ধুখ্যাত হাসান উদ্দিন সরকার শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বৃহস্পতিবার, মে ৩, ২০১৮, সকাল ১০টায় নির্বাচনী ইশতিহার ঘোষণা করেছেন। ইশতিহার ঘোষণাকালে তিনি বলেন, একটি রাস্তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই গুরুত্ব বিবেচনা করেই আমি গাজীপুরে প্রায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলাম। রাষ্ট্রায়ত্ত কলকারখানাগুলোতে শ্রমিকদের সন্তানদের পড়াশুনার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলাম।

তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবনের সকল পর্যায়েই আমি শিক্ষা বিস্তারে অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, আর শিক্ষক হচ্ছেন শিক্ষার মেরুদণ্ড। তাই শিক্ষা ও শিক্ষকদের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগুলোকে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় সম্পৃক্ত করে উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করবো। ভোকেশনাল, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্প্রসারণ করে বেকার সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে। এতিম ও দুঃস্থ, গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করে স্বল্প আয়ের মানুষের সন্তানদের শিক্ষা নিশ্চিত করবো। নারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে বেকার যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে সমাজ উন্নয়নে সম্পৃক্ত করবো। প্রত্যেক এলাকায় গণপাঠাগার স্থাপন করা হবে।

২০ দলীয় ঐক্যজোট এর ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ন মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, বাবুল আহমেদ, সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মাজহারুল আলম, ওলামাদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পীরজাদা রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা শাফিন, জেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সবুজ, মাহবুবুল অঅলম শুক্কুর, সৈয়দ হাসান সোহেল জুন্নরাইন, হুমায়ুন কবির রাজু, আবুস সালাম, প্রভাষক বসির উদ্দিন , মো আবুল হোসেন, মো, আইয়ুব আলী, ইসমাইল শিকদার বসু, জেলা হেফাজতের যুগ্ন সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মো খায়রুল হাসান, সাংগঠনিক সেক্রেটরি মো আফজাল হোসাইন, মনিরুজ্জামান খান লাবলু, রাশেদুল ইসলাম কিরণ, অভিনেতা ডন, খালেকুজ্জামান বাবলু, আব্দুর রহিম খান কালা, জিয়াউল হাসান স্বপন, আতিকুর রহমান আতিক, জমির উদ্দিন।

তার নির্বাচনী ইশতিহার নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো — 

অবরুদ্ধ গণতন্ত্র, ভূলুণ্ঠিত মানবাধিকার এবং  নৈমিত্তিক গুম-খুন-হত্যা-ধর্ষণে জর্জরিত দেশ ও জাতির এক চরম ক্রান্তিলগ্নে এবারের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী, আপসহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের মা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তবুও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সংগ্রামের অংশ হিসেবেই আমরা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কালের পরিক্রমায় ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত গাজীপুর আজ রূপান্তরিত হয়েছে শিল্প নগরীতে, বেড়েছে জনসংখ্যা। বর্তমানে দেশের প্রায় সবকয়টি জেলার লোকই গাজীপুরে বসবাস করে। গাজীপুরের জনসংখ্যা যেভাবে বেড়েছে সেভাবে কিন্তু নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা যায়নি। অপর্যাপ্ত নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিয়েই টঙ্গী ও গাজীপুর এই দুইটি পৌরসভা এবং গাছা, পূবাইল, বাসন, কাউলতিয়া, কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এই ছয়টি ইউনিয়ন মিলে গঠিত হয় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন। আপনারা জানেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে আমাদের প্রিয় নেতা সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গাজীপুর মহানগরবাসী বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত করেছিলেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, জনরায়কে অসম্মান করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত একজন মেয়রকে ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারা অন্তরালে রাখা হয়েছিল। ফলে উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে গাজীপুরবাসী।

আপনাদের নিশ্চয় স্মরণে রয়েছে যে, টঙ্গী পৌরসভার প্রতিষ্ঠাকালীন সময়েই আমি দুইবার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পৌরবাসীর সহযোগিতা নিয়েই আমি টঙ্গী পৌরসভাকে দেশের অন্যতম সেরা একটি পৌরসভায় পরিণত করতে পেরেছিলাম। পরবর্তীকালে গাজীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছি। দীর্ঘদিনের অর্জিত এসব অভিজ্ঞতা আমি সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাই। ‘নগর পিতা’ নয় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের একজন কর্মী হয়ে নাগরিকদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে চাই।

মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান গাজীপুর থেকেই শুরু হয়েছিল হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ। সরাসরি সেই প্রতিরোধ আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব প্রদান করার কারণে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান ও গর্বিত মনে করি। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক ও এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে আমার ১৯ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছি।

১। মাস্টার প্লান প্রণয়ন
২। নগরভবন নির্মাণ
৩। সেবা দানকারী অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয়
৪। দুর্নীতি দূরীকরণ ও স্বচ্ছতা
৫। শিক্ষা
৬। স্বাস্থ্য সেবা ও নিরাপদ খাদ্য
৭। আবাসন ব্যবস্থা
৮। নিরাপত্তা
৯। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন
১০। যানজট নিরসন ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ১১। নগরীর পরিচ্ছন্নতা
১২। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
১৩। সবুজ ও পরিবেশ বান্ধব নগরায়ন
১৪। জলাবদ্ধতা দূরীকরণ
১৫। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ
১৬। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ
১৭। ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও বিনোদন
১৮। নাগরিক সেবা আধুনিকীকরণ 
১৯। অন্যান্য কর্মসূচি। 

সুপ্রিয় নগরবাসী,

আপনাদের বিবেক, বিবেচনা এবং সহানুভূতির প্রতি বিএনপি তথা ২০ দলীয় ঐক্য জোটের পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবারের নির্বাচনে জয়লাভ করে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিমুক্ত শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব নগর গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। আশা করি আগামী ২৬শে জুনের নির্বাচনে ধানের শীষে আপনাদের মূল্যবান ভোট প্রদান করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জনগণের সেবা করার সুযোগ প্রদান করবেন। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

No comments:

Post a Comment