একেএম জমির উদ্দিন
রাষ্ট্রায়ত্ত সাতটি ব্যাংক মূলধন সংক্রান্ত শর্ত পূরণ করতে পারছে না। এর অর্থ হলো, এই ব্যাংকগুলোকে আবারও মূলধন সরবরাহের জন্য জনগণের করের টাকার ওপর নির্ভর করতে হবে সরকারকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক যে হিসাব দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সাতটি ব্যাংকসহ মোট ১০টি ব্যাংকে মূলধনের ঘাটতি ২৩,৩৬৩ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। এই হিসাব গত মার্চ মাস পর্যন্ত। এর আগের প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) চেয়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ৩,৮০০ কোটি টাকা বেশি।
মূলধন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলো হলো, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও ফার্মার্স ব্যাংক।
এদের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৭,৯৩০ কোটি টাকা। উল্লিখিত সময়ের তিন মাস আগে এই ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭,৭৭৭ কোটি টাকা। আর তিন মাসে সোনালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৫,৩৯৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬,৭৫৫ কোটি টাকা।
অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অগ্রণী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি থাকলেও তিন মাস আগে ব্যাংকটিতে উদ্বৃত্ত ছিল ১৫৭ কোটি টাকা। আর অনিয়ম ও দুর্নীতিতে সংকটে থাকা ফার্মার্স ব্যাংকও প্রথম প্রান্তিকে প্রয়োজনীয় মূলধন নিয়ে সংকটে ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত ৩১ মার্চ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি গিয়ে দাঁড়ায় ২১,২৮২ কোটি টাকা। এক প্রান্তিক আগে তাদের ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৭,৪৪২ কোটি টাকা।
২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি মেটাতে ১৪,৫০৫ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। সুশাসনের অভাবে ধুকতে থাকা এই প্রতিষ্ঠানগুলো এর পরও সংকট থেকে উঠে আসতে পারছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বর্তমানে যে অবস্থা চলছে তাতে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও স্থানীয় ব্যবসা সংশ্লিষ্টদের কাছে এমনই একটা বর্তা যায়। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত দ্রুত সংকট উত্তরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। বৈদেশিক বিনিয়োগের সিদ্ধান্তের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
- কার্টসি — thedailystar.net/ রোববার, জুন ২৪, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment