Search

Thursday, November 1, 2018

‘গায়েবি’ মামলা - পক্ষাঘাতগ্রস্ত বারীর অচল হাতেও বোমা ছিল

  • বারী ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী গ্রামের বাসিন্দা
  • বারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক
  • শনিবার বারীকে আটক করা হয় বলে নথিতে উল্লেখ
  • পরিবারের দাবি, গত শুক্রবার বারীকে তুলে নেয় পুলিশ
  • মামলার পর বারীকে কারাগারে পাঠানো হয়
  • পরিবার বলেছে, বারী এক বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত


আবদুল বারীর দুই হাতে ছিল দুটি হাতবোমা। চেষ্টায় ছিলেন নাশকতা সৃষ্টির। এ অবস্থায় আটক করা হয়েছে তাঁকে। আটকের পর এমন অভিযোগে পুলিশের করা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।

কিন্তু আবদুল বারীর পরিবার বলেছে, তিনি দুবার মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে এক বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায় আছেন। শরীরের বাঁ দিকটা প্রায় অচল হয়ে আছে। বাঁ হাত ও বাঁ পা নড়াচড়া করতে পারেন না। গতকাল বুধবারও দেখা গেছে, হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়ার সময় তাঁকে প্রায় কোলে করে গাড়িতে তোলা হচ্ছে।

পল্লিচিকিৎসক আবদুল বারী ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি হলিধানী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। সদর উপজেলার বিষখালী বাজারের পাশের একটি স্কুল মাঠ থেকে গত শনিবার আটক করা হয় বলে মামলার নথিতে বলা হয়েছে। মামলার পর আদালতের মাধ্যমে ওই দিনই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তবে পরিবারের দাবি, গত শুক্রবার দুপুরে হলিধানী বাজারে আবদুল বারীর ওষুধের দোকান থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।

ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে আবদুল বারীকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক মোকাররম হোসেন বারীকে ফরিদপুর কিংবা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

চিকিৎসক মোকাররম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল বারী ব্রেইনস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী। সদর হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়।

আবদুল বারীর মেজ ছেলে শাহনেওয়াজ সুমন বলেন, শুক্রবার দুপুরে তাঁর বাবা তাঁদের ওষুধের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় সদর থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে সেখানে যান। তাঁরা কথা আছে বলে তাঁর বাবাকে নিয়ে যান। পরদিন শনিবার নাশকতার মামলা দিয়ে আরও কয়েকজন আসামির সঙ্গে আদালতে পাঠানো হয় তাঁকে।

আবদুল বারীর বড় ছেলে শামিম আহমেদ বলেন, তাঁর বাবা বাড়িতেই শুয়ে-বসে সময় কাটান। কখনো কখনো কোনো রকমে পা টেনে টেনে বাড়ি থেকে আনুমানিক এক শ গজ দূরে হলিধানী বাজারে ওষুধের দোকানে যান। কখনো সন্তানেরাই তাঁকে দোকানে বসিয়ে দিয়ে আসেন। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ রাশেদ ইমাম জাহিদের অধীনে চিকিৎসাধীন।

এসআই আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আবদুল বারীকে আটকের সময় সদর থানার কাতলামারী পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে ফাঁড়ির আরেক কর্মকর্তা এসআই সাদিকুর রহমান ছিলেন। তিনি গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে বারীকে তাঁর ওষুধের দোকানের সামনে থেকে আটক করা হয়।’

সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ বলেন, চিকিৎসক যদি বারীকে অসুস্থ বলেন, তাহলে তিনি আইনগত সহযোগিতা পাবেন।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ০১ নভেম্বর ২০১৮

No comments:

Post a Comment