Search

Sunday, December 2, 2018

১২টি পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ হবে, এমন প্রত্যাশা থেকে বাংলাদেশে ১২টি পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশীয় পর্যবেক্ষকদেরও অর্থায়ন করবে দেশটি। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনে কারচুপি হবে— বিরোধী দলগুলোর এমন আশঙ্কা প্রকাশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর ঘোষণা আসায় এ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা কী, সে বিষয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। এসবের মধ্যে পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর ঘোষণা এল যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে ১২টি পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র । দুই সদস্যের সমন্বয়ে গঠন করা হবে প্রত্যেকটি দল। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল অফিসার উইলিয়াম মোয়েলার সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছে। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। আর এ অবাধ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আমরা পর্যবেক্ষকদের অর্থায়ন করছি।

সাম্প্রতিক সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতেও অনেক ভোটার নিরুৎসাহিত হয়ে থাকতে পারে— এমন উদ্বেগ সে সময় তুলে ধরেছি আমরা। তবে একই ধরনের ঘটনা জাতীয় নির্বাচনে দেখা যাবে বলে আশঙ্কা করছি।

মার্কিন এ কূটনীতিক জানান, ব্যাংককভিত্তিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ৩০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশের প্রায় ১৫ হাজার পর্যবেক্ষককে যৌথভাবে অর্থায়ন করবে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি), ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ (ডিএফআইডি) ও সুইস সরকার। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা সারা দেশেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে থাকবেন। তবে প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে হয়তো যাওয়া সম্ভব হবে না তাদের।

বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার লক্ষ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে লড়ছেন। অন্যদিকে তার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দি রয়েছেন। যদিও তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে দাবি করে আসছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার পাশাপাশি বিএনপির আরো অনেক নেতা-কর্মীও এখনো কারাবন্দি আছেন। এমন পরিস্থিতিতে ভোট সুষ্ঠু হবে না বলে আশঙ্কার কথা বার বার জানান দিয়ে আসছে বিএনপি।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচন বয়কট করলেও এবার সে পথে হাঁটছে না বিএনপি। নতুন জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে দলটি। যদিও নির্বাচন অবাধ হবে না— এমন আশঙ্কা থেকে আসন্ন নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের দাবি জানিয়ে আসছে তারা।

সাধারণ নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের এমন উদ্বেগের মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না বলে জানিয়েছে ইইউ। সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট (ইপি) এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না তারা। এছাড়া নির্বাচন-পরবর্তী ফলাফল নিয়েও কোনো মন্তব্য করবে না ইইউ।

নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠালেও ভোট-পূর্ব ও ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দুই নির্বাচন বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছে ইইউ। তারা হলেন ডেভিড নয়েল ওয়ার্ড ও ইরিনি-মারিয়া গোওনারি। এ দুই বিশেষজ্ঞ প্রায় দুই মাস বাংলাদেশে অবস্থান করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবেন। তবে বাংলাদেশে নিজেদের অভিজ্ঞতা নিয়ে কোনো সংবাদ সম্মেলন করবেন না তারা।

  • কার্টসিঃ বণিক বার্তা/ ০২ ডিসেম্বর ২০১৮

No comments:

Post a Comment