Search

Wednesday, December 12, 2018

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ইসিতে হাফিজ ও খোকন

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। গতকাল তারা পৃথকভাবে নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার পরিস্থিতির কথা জানান। ভোলাসহ সারা দেশের নির্বাচনী পরিস্থিতির বিষয়ে অভিযোগ জানাতে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ। জাতীয় নির্বাচনের আগে, সারা দেশে আইনশৃঙ্খলার ঘোরতর অবনতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। নির্বাচনের আগে, অবৈধ অস্ত্র জমা নেয়া ও এসবের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর কথা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে নিশ্চুপ বলেও অভিযোগ করেন তিনি। অবৈধ অস্ত্রধারীরা ঢাকা ও সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলেও জানান মেজর (অব.) হাফিজ। তিনি বলেন, তারা ইতিমধ্যে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপরে ক্রমাগত অত্যাচার-নির্যাতন বেড়েই চলেছে।

জেলা যুবদলের সভাপতি জামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সেলিমসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে মেরে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ সময় হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ভোলা-৩ এলাকা বাংলাদেশের সবচেয়ে সন্ত্রাসকবলিত এলাকা। সেখানে জান-মালের কোনো নিরাপত্তা নেই। রাস্তাঘাটে অস্ত্রধারীরা টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দেখেও দেখছে না। ৩৫ জন যুবদল কর্মী আহত হওয়ার পর উল্টো এসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, রাজধানী থেকে সন্ত্রাসীরা গিয়ে ভোলার সংসদীয় আসনে অবস্থান নিয়েছে। সারা দেশে ভোটাররা যদি কেন্দ্রে যেতে না পারেন সেজন্য ক্ষমতাসীন সরকার দায়ী থাকবে বলেও তিনি জানান। নির্বাচন কমিশনও এই দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ভোলা-৩ আসনের অন্তত ৫০০ নেতাকর্মী উচ্চ আদালতে হন্যে হয়ে ঘুরছে বলেও জানান তিনি। হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছি না। অন্য প্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন এবং প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে, এক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর আমি আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। পুলিশি হয়রানি ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত-প্রশাসনকে অবহিত করতেও নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেন মেজর (অব.) হাফিজ। 

পুলিশের বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নোয়াখালী-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। মঙ্গলবার দুপুরে চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে খোকন সাংবাদিকদের বলেন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে মহড়া দিচ্ছে। পুলিশ এসব অপরাধের কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দুই বিএনপি নেতাকর্মীকে অপহরণ করা হয়েছে, গুলি করা হয়েছে। আহত হয়ে এসব নেতাকর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হলেও পুলিশ কোনো মামলা নিচ্ছে না। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর প্রথম দিন থেকেই চাটখিল- সোনাইমুড়ি এলাকায় পুলিশ আগ্রাসী হয়ে উঠেছে দাবি করে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিনা কারণে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করছে পুলিশ। পাশাপাশি, সারা দেশেও পুলিশ গণগ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। নোয়াখালীর রিটার্নিং কর্মকর্তাকে  এসব অভিযোগের বিষয়ে জানানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ কমিশনের কোনো কথা শুনছে না। ইসি গণগ্রেপ্তার বন্ধ করতে বললেও পুলিশ এসব আমলে নিচ্ছে না। নতুন নতুন মামলায়, মাদক দিয়ে কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। চাটখিলের ওসি এক বিএনপি নেতাকে আটক করে তার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে। প্রচারণার শুরুর দিন থেকেই পুলিশের ওপর কমিশনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। পুলিশ, সরকারি অফিসার, আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছেন। রিটার্নিং অফিসাররা চেষ্টা করেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে পারছেন না। এসব অনিয়ম বন্ধে কমিশনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান মাহবুব উদ্দিন খোকন। সেই সঙ্গে পুলিশ অফিসারদের বদলি ও অপরাধের ক্ষেত্রে দ্রুত শাস্তি প্রদানের দাবি জানান তিনি।

কার্টসিঃ মানবজমিন/ ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ 

No comments:

Post a Comment