মোঃ নিজাম উদ্দিন
শুধু কোটা বাতিল করে বিশেষ বিসিএস বন্ধ না করলে লাভ কী? ‘কোটা-সংস্কার-আন্দোলন’ এর প্রধান দাবী ছিল সকল সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার করে তা যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে অাসা,বাতিল করা নয়। অথচ এখন বলা হলো শুধু মাত্র প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরির কোটা বাতিল! তার মানে কী দাঁড়ালো? তৃতীয় ও চতুর্থ কিংবা এর পরের ক্যাটাগরির চাকরিতে কোটা সম্পূর্ন অাগের মতই থেকে যাচ্ছে! এই ব্যবস্থায় চাকরি প্রত্যাশীদের একটা ছোট অংশ লাভবান হলেও বৃহৎ অংশকে সেই অাগের মতই কোটার গ্লানি বইতে হবে।
এছাড়া বলা হচ্ছে, প্রজ্ঞাপন হতে হতে জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে! এটা কেন? এরও একটা অপরাজনীতি অাছে, সেটা হলো ডিসেম্বরের মধ্যে যেহেতু দেশে নির্বাচন হওয়ার কথা, সেহেতু দেশজুড়ে লাখো শিক্ষিত বেকার যুবকদের ক্ষোভকে ছলে বলে কৌশলে কিছুটা দমাতে পারলে, ম্যান্ডেটবিহীন সরকার যে ফরম্যাটেই নির্বাচন করুন, কিছুটা সুবিধা পাবার স্বপ্ন দেখে। আর যদি অবাধ নির্বাচন হয়, তাহলে নতুন সরকারের ঘাড়েই যাতে বিষয়টা চাপে। অার অাওয়ামী লীগ তখন কোটা সংস্কার অান্দোলনকারীদের দিয়ে একটা অান্দোলন জমাতে পারে। অার ভোট ডাকাতি করে আবারও ক্ষমতায় গেলে ছলে-বাই-কৌশলে যাতে এই প্রক্রিয়াটা অারো দীর্ঘ করা যায় এবং আন্দোলনকারীদের একেবারে শেষ করা যায়।
এই মুহূর্তে প্রজ্ঞাপন জারি না করেই সরকারের কোটা বাতিলের ক্রেডিট নেওয়ার বড় কারণ হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের ভোট। সরকার ভাল করেই জানে কোটার বিষয়টির নূন্যতম একটা ফয়সালা না হলে তারুণ্যের ভোট তাদের নির্বাচনের রাজনীতিকে সোজাসাপ্টা না বলে দিবে। এই ঝুঁকি সরকার নিতে চাচ্ছে না।
এদিকে চল্লিশ তম বিসিএসের সার্কুলার জারি করা হয়েছে যেখানে কোটা বাতিলের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি! যদি বাতিলও হয়েই থাকে অার চল্লিশ তম বিসিএস থেকে কার্যকর না হয় তার মানে দাঁড়ালো একচল্লিশ তম বিসিএস থেকে কার্যকর হবে। সোজা ভাষায় বললে কোটা বাস্তবায়ন হতে কম করে হলেও অার এক থেকে দুই বছর সময়ের প্রয়োজন। এখন সরকার যা করছে তা মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে ভোট বাড়ানোর অপচেষ্টা, অার কিছুই নয়।
- লেখক — মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সহসম্পাদক ,ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ। এমফিল গবেষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাবি।
No comments:
Post a Comment